অনলাইনে মনোনায়নপত্র জমা দেয়ার সময় জটিলতায় পড়েছিলেন দাবি করে উচ্চ আদালতে গিয়েছিলেন যশোর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী আরিফুল ইসলাম হিরা। হাইকোর্টের রায়ে প্রার্থীতা ফিরে পাওয়ার পাশাপাশি প্রতীকও পেয়েছেন তিনি। বহু দৌড়ঝাপ ও অর্থ খরচ করে হিরা ৫ জুনের নির্বাচনে প্রার্থী তালিকায় নাম তুললেও ভোটের মাঠে তাকে দেখা যাচ্ছে না! অন্য প্রার্থীদের মতো শহর-গ্রামে তার পোস্টারও নেই। গণসংযোগও চোখে মেলেনি ভোটারদের।
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আরিফুল ইসলাম হিরা যশোর শহরের কাজীপাড়ার বাসিন্দা। তিনি প্রয়াত সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নুরজাহান ইসলাম নীরার ছেলে। তার প্রতীক ‘হেলিকপ্টার’।
যশোর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ৮জন। এরমধ্যে আরিফুল ইসলাম হিরা ও শাহারুল ইসলাম প্রার্থীতা ফিরে পেয়েছেন উচ্চ আদালতে রিট করে। শাহারুল ইসলাম নির্বাচনের মাঠে নামলেও ব্যতিক্রম হিরা। তাকে বেশি ফেসবুকেই সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে। অন্যদের মতো মাঠে-ময়দানে গণসংযোগ করতে দেখেননি ভোটাররা। প্রতিদ্বন্দ্বী ৭ প্রার্থীর পোস্টারে শহর-গ্রাম ছেয়ে গেলেও তার প্রাতীকের পোস্টার চোখে পড়ছে না। ভোটারদের অনেকেই বলেছেন, নাম ফোটানোর জন্যই চেয়ারম্যান প্রার্থীর তালিকায় নাম তুলেছেন তিনি। কারো কারো মতে, যশোরের রাজনীতিতে টিকে থাকার জন্য নামমাত্র নির্বাচন করছেন আরিফুল ইসলাম হিরা।
ফতেপুর ইউনিয়নের ভোটার বাদল শেখ বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে সকল প্রার্থীর প্রচার প্রচারণা থাকলেও হেলিকাপ্টার মার্কায় যিনি দাঁড়িয়েছেন তার কোন কিছুই আমাদের চোখে পড়েনি। কেবল পত্রিকায় দেখেছি হেলিকপ্টার মার্কায় একজন নির্বাচন করছেন।
লেবুতলা ইউনিয়নের ভোটার শামসুর রহমান জানান, নির্বাচন মানেই ব্যাপক প্রচার প্রচারণা। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাওয়া। তবে পিছিয়ে আছেন আরিফুল ইসলাম হিরা। আমরা সকল প্রার্থীর প্রচার প্রচারণার উপরই নজর রাখি। সন্ধ্যার সময় চায়ের দোকানে বসলে নির্বাচন নিয়ে কমবেশি আড্ডা হয়। কিন্তু এই প্রার্থীর বিষয়ে কেউ তেমন কিছু জানেও না; বলতেও পারে না।
পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার মোতাহার হোসাইন বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে আরিফুল ইসলাম হিরাকে চিনি। তিনি সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূরজাহান ইসলাম নীরার ছেলে। তিনি এবার উপজেলা পরিষদে নির্বাচন করছেন এটাও জানি, কিন্তু এখনো পর্যন্ত তার কোন প্রচার প্রচারণা দেখিনি। আমিতো ভাবলাম তিনি হয়তো নির্বাচন থেকে সরে গেছেন। তবে ফেসবুকে মাঝে মাঝে তার প্রচারণা দেখা যায়।
উচ্চ আদালত হয়ে প্রার্থীতা ফিরে পাওয়ার পরও কেন প্রচার-প্রচারণায় পিছিয়ে দৈনিক কল্যাণ এমন প্রশ্ন করেছিল আরিফুল ইসলাম হিরার কাছে। তিনি বলেন, আমি শুরু থেকেই সাধারণ ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। আসলে নির্বাচনে ব্যানার পোস্টার করে; লিফলেট বিলি করে; ভোটারদের মন জয় করা সম্ভব না। তাই আমি ভোটারদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছি এবং আমার হেলিকপ্টার মার্কায় ভোট দেওয়ার কথা বলছি। তাছাড়া নির্বাচন কমিশন ভোটের ব্যয় হিসেবে টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। আমিতো তার থেকে বেশি ব্যয় করতে পারি না। তাই নিয়ম অনুযায়ী যতটুকু ব্যয় করা সম্ভব এবং ওই খরচে যতটুকু প্রচার করা যায় সেটা করে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আমি নির্বাচন কমিশনের দেয়া নিয়ম কানুন মেনেই নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। আমার বিশ্বাস সাধারণ মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে আপনাদের সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দেবে।