অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অবৈধ অর্থের প্রবাহ এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে সম্পদের পাচার বন্ধ করা অত্যাবশ্যক। পাচার হয়ে যাওয়া এসব সম্পদ ফেরত আনার জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করতে হবে।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রাজনৈতিক মুক্তি এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক জাগরণ ব্যতীত শান্তি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে সাফল্য অর্জন সম্ভব নয়। প্রায় এক দশক পূর্বে বিশ্ব সম্প্রদায় সর্বসম্মতভাবে এজেন্ডা ২০৩০ প্রণয়ন করে। এই সার্বজনীন টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টগুলো (এসডিজি) অর্জনে আমরা সবাই আমাদের সামষ্টিক আকাঙ্ক্ষা ও বিশ্বাস অর্পণ করেছি। তবুও মাত্র ১৫ শতাংশের কম লক্ষ্যসমূহ অর্জিত হয়েছে। এক্ষেত্রে অনেক উন্নয়নশীল রাষ্ট্র আরো পিছিয়ে আছে।
ড. ইউনূস বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোকে এসডিজি অর্থায়নে বছরে প্রায় ২.৫ (আড়াই) থেকে ৪ (চার) ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমান ঘাটতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। উন্নয়নশীল বিশ্বের ঋণের বোঝা, ক্ষয়িষ্ণু আর্থিক সক্ষমতা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা আশা করি— উন্নয়নের জন্য অর্থায়ন সংক্রান্ত ৪র্থ (চতুর্থ) আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এ ধরনের জটিল এবং কাঠামোগত সমস্যাগুলোর দিকে নজর দেওয়া হবে। বহুপাক্ষিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমন অভিন্ন লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে হবে যেন সব রাষ্ট্র সমানভাবে সম্পদ ও সুযোগের ব্যবহার করতে পারে; তারা নিজেদের কর্মসূচিতে সামাজিক ব্যবসাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা দিতে পারে; যেন নিম্ন আয়ের দেশগুলোর বাস্তবতা বিশেষভাবে মোকাবিলা করা যায়। যা ব্যবসায়ী উদ্যোগ ও ব্যক্তির সৃজনশীলতাকে উদ্বুদ্ধ করে এবং বঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে বিশেষভাবে সহায়তা করে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, আমাদের প্রচেষ্টা, সক্ষমতা ও সম্পদ একত্রীকরণের মাধ্যমে সবার সামর্থ্য, উদ্ভাবনী শক্তি এবং সমৃদ্ধিকে কাজে লাগাতে হবে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং জলবায়ু সহনশীলতা নিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত যে প্রতিকূলতার সম্মুখীন হচ্ছি, সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমে তার মোকাবিলা করতে হবে।