প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে সাতজন চেয়ারম্যান, নয়জন ভাইস চেয়ারম্যান এবং ১০ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। চূড়ান্ত তালিকা এলে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ইসি থেকে এই তথ্য জানা গেছে।যেসব উপজেলায় প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন:
বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, হাকিমপুর (দিনাজপুর) উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, সাঘাটা (গাইবান্ধা) উপজেলার চেয়ারম্যান, বেড়া (পাবনা) উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, সিংড়া (নাটোর) উপজেলার চেয়ারম্যান ও কুষ্টিয়া সদরের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।
এছাড়া, বাগেরহাট সদরে তিনটি পদে, মুন্সীগঞ্জ সদরে তিনটি পদে ও শিবচর (মাদারীপুর) তিনটি পদে প্রার্থীরা বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।
পাশাপাশি, বড়লেখা (মৌলভীবাজার) উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, পরশুরাম (ফেনী) উপজেলায় তিনটি পদে, সন্দ্বীপ (চট্টগ্রাম) উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান, কক্সবাজার সদরে ভাইস চেয়ারম্যান, রোয়াংছড়ি (বান্দরবান) উপজেলার চেয়ারম্যান পদ ও কাউখালী (রাঙ্গামাটি) উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।
চার ধাপে অনুষ্ঠেয় ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ইতোমধ্যে তফসিল দিয়েছে ইসি। এবার প্রথম ধাপে ১৫০ ও দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলার ভোট হওয়ার কথা রয়েছে। তৃতীয় ধাপে ১১২টির ভোট ২৯ মে এবং চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ভোট হবে ৫ জুন।
প্রথম ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিল ও বাছাইয়ের সময় শেষ। বৈধ প্রার্থী এক হাজার ৭৮৬ জন, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিলের সময় ছিল ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ছিল ২২ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল, আর ১৫২ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ৮ মে।
এই ধাপের নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিল আবেদন নিষ্পত্তি করবেন আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে জেলা প্রশাসক।
দ্বিতীয় ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিল ২১ এপ্রিল শেষ সময়, মনোনয়নপত্র বাছাই ২৩ এপ্রিল, আপিল গ্রহণ ২৪-২৬ এপ্রিল, আপিল নিষ্পত্তি ২৭ থেকে ২৯ এপ্রিল। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল, প্রতীক বরাদ্দ ২ মে। আর ১৬১ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ২১ মে।
এই ধাপের নির্বাচনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ভোটারের সংখ্যা ৫ লাখের বেশি যেখানে, সেখানে একাধিক সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োজিত থাকবেন।
তৃতীয় ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়ন ফরম জমার শেষ তারিখ ২ মে, মনোনয়ন যাচাই-বাছাই ৫ মে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ৬ থেকে ৮ মে। আপিল নিষ্পত্তি ৯ থেকে ১১ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ মে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মে এবং ভোট ২৯ মে। এই ধাপে ১১২ উপজেলায় ভোট হবে।
আগামী ৫ জুন দেশের ৫৪ উপজেলায় চতুর্থ ধাপের ভোটগ্রহণ হবে। এর সঙ্গে নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার প্রার্থীর মৃত্যুতে স্থগিত হওয়া ভোটও এ ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। এতে করে মোট ৫৫ উপজেলায় ভোট হবে।
চতুর্থ ধাপে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৯ মে, মনোনয়ন যাচাই-বাছাই ১২ মে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ১৩ থেকে ১৫ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৯ মে। প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে ২০ মে।
চতুর্থ ধাপের নয়টি উপজেলায় ভোট হবে ইভিএমে। বাকিগুলোতে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে।
এদিকে, যৌথ অভিযান চলমান থাকায় বান্দরবানের তিন উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম।
এসময় ইসি সচিব বলেন, বান্দরবানের থানচি, রুমা ও রোয়াংছড়িতে যৌথ বাহিনীর অপারেশন চলমান রয়েছে। তাই গোয়েন্দা সংস্থার সুপারিশের ভিত্তিতে আপাতত সেখানকার নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তীতে সুবিধাজনক সময়ে এই উপজেলাগুলোতে নির্বাচন আয়োজন করব।