ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার পর হাড় ও মাংস আলাদা করে হলুদ মিশিয়ে ব্যাগে ঢোকায় হত্যাকারীরা। যাতে কেউ সন্দেহ করলে বাজার থেকে কেনা মাংস বলে এড়িয়ে যাওয়া যায়— এমনটা জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
ডিএমপির ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, দেশে হত্যাকাণ্ডের সাহস না পেয়ে, হত্যাকারীরা দেশের বাহিরে হত্যার পরিকল্পনা করে। প্রথমে তারা কলকাতায় বাসা ভাড়া নেয়। এরপর পরিবার পরিচয়ে তারা কলকাতার ভাড়া বাসায় উঠে। সেখানে জিহাদ বা জাহিদ ও সিয়াম নামে দুইজনকে ভাড়া করে তারা। পরে হত্যাকাণ্ডের সব পরিকল্পনা সাজিয়ে মূল পরিকল্পনাকারী ঢাকায় ফিরে আসে।
হারুন অর রশীদ আরও বলেন, ১২ মে এমপি আনার কলকাতায় গিয়ে বন্ধু গোপালের বাসায় উঠে। পরদিন ১৩ মে কাজ আছে বলে বাসা থেকে বের হন আনার। এ সময় ফয়সাল নামে একজন সাদা গাড়িতে তাকে রিসিভ করে। পরে কিছুদূর গিয়ে হত্যাকারী সেই গাড়িতে উঠে। এরপর তারা ওই ভাড়া করা বাসায় যায়। এ সময় মুস্তাফিজ নামের একজন ব্যক্তি ওই বাসায় ঢোকে। সেই বাসায় আগে থেকেই জিহাদ অথবা জাহিদ ও সিয়াম ছিল। এরপর আধ ঘণ্টার মধ্যেই আনারকে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের ওর মরদেহ খন্ডিত করা হয়। পরে গ্রে রঙের একটি স্যুটকেসে করে মরদেহের একটি অংশ সরিয়ে ফেলা হয়। পরদিন মরদেহের বাকী অংশের হাড় ও মাংসের সাথে হলুদ মিশিয়ে পলিথিনে করে সরিয়ে ফেলা হয়।
হত্যাকারীদের উদ্দেশ্য ছিল আনারের মরদেহ এমনভাবে গুম করা, যাতে তাকে কোনোদিন খুঁজে না পাওয়া যায়। হত্যাকাণ্ডের পর হত্যাকারীরা একে একে বাংলাদেশে চলে আসলে মূল পরিকল্পনাকারী দেশ থেকে চলে যায় বলেও জানান হারুন। বলেন, দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ড সংঘঠিত করা হয়েছে। তারা অনেক দিন ধরে এমপি আনারের ভারতে যাওয়ার সুযোগ খুজছিল।
হারুন অর রশীদ আরও বলেন, হত্যার পর হত্যাকারীরা আনারের ফোন থেকে বিভিন্ন জনকে ম্যাসেজ পাঠায়। যাতে কেউ তার নিখোজের বিষয়টি সন্দেহ না করে। সবশেষ ১৮ মে একটি ম্যাসেজ পাঠানো হয় বলেও জানান তিনি। এছাড়া ঘন ঘন একাধিক স্থানে আনারের ফোনটি পাঠানো হয়। সবশেষ বেনাপোল থেকে আনারের ফোন দিয়ে তার ব্যক্তিগত সহকারীর কাছে ম্যাসেজ পাঠানো হয়। এর মাধ্যমে তদন্তকারী সংস্থাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করারও চেষ্টা করা হয়।