টানা দু’সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলছে কোটা সংস্কারের এই আন্দোলন। সোমবার ছিল এই কর্মসূচির পনেরোতম দিন। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ, এই দু্ই পক্ষেরই নির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। তার আগেই শুরু হয় আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ। আন্দোলনকারীদের দাবি, ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন অতর্কিতভাবে হামলা করায় সংঘর্ষের শুরু হয়। শান্তিপূর্ণ এই আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই তাদের এমন তৎপরতা বলেও দাবি তাদের।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোটা সংস্কারের নামে আন্দোলনকারীরা রাষ্ট্রবিরোধী অবস্থান নিয়েছে দাবি করে ছাত্রলীগ বলছে, তাই বাধ্য হয়েই তাদের প্রতিহত করতে হয়েছে। দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে অনিবার্য ফলাফল সোমবারের সহিংসতা। রক্তাক্ত বিশ্ববিদ্যালয়। আহত তিনশতাধিক শিক্ষার্থী।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কোটাবিরোধী আন্দোলন কিংবা তা দমন, কোনো কাজেই সহিংসতা কোনো সমাধান নয়। আন্দোলনকারী ও সরকার কোটার হার যৌক্তিক করার ব্যাপারে প্রায় একমত হলেও শেষ সময়ে সহিংসতা কেন হলো, তা খতিয়ে দেখারও পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। বলছেন, সময়ক্ষেপন না করে আন্দোলনকারীদের সাথে আলোচনায় বসে সমস্যার সমাধান করতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে সিনিয়র সাংবাদিক সোহরাব হোসেন বলেন, যারাই আহত হয়েছে তাদের অধিকাংশই শিক্ষার্থী বা আন্দোলনকারী। আওয়ামী লীগের উচিত তাদের ছাত্রসংগঠনকে নিবৃত্ত করা।
কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আরিফুজ্জামান বলেন, আমরা গণতন্ত্র নিয়ে সারা পৃথিবীতে গর্ব করছি। সেটিই তো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কারা আহত হলে সেটি কথা নয়, এরাই তো আমাদের ভবিষ্যত। কাজেই যে আহত হোক সেটিই আমাদের জন্য কষ্টের।
সব পক্ষকে ধৈর্য্য ধারণের পাশাপাশি আন্দোলনকারীদের সাথে সরকারের দায়িত্বশীলদের আলোচনার পরামর্শ দিয়ে সোহরাব হোসেন, আন্দোলন যৌক্তিক হোক বা অযৌক্তিক হোক, আলোচনা করে তাদের বোঝাতে হবে। সরকারের সীমাবদ্ধতা থাকলে সেটিও জানাতে হবে। আমাদের দেশের সরকারের সমস্যা হলো- তারা যুক্তির ভাষায় চলেন না। আলোচনা করতে সমস্যা কোথায়?
অধ্যাপক আরিফুজ্জামান বলেন, সমস্যার সমাধানে সরকার পক্ষকেই এগিয়ে আসতে হবে। আন্দোলনকারীদের আস্থা দিতে হবে। যাতে এইক্ষেত্রে যে রায়ই আসুক না কেন, শিক্ষার্থীরা আস্থা রাখতে পারবে। শক্তি প্রয়োগ কখনই সমাধান হতে পারে না।