1. live@www.chitrarpar.com : news online : news online
  2. info@www.chitrarpar.com : চিত্রারপাড় :
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৯ পূর্বাহ্ন

গণঅভ্যুত্থানে আহত মিলনকে চাকরি দিলেন বাঘারপাড়ার ইউএনও

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৯ বার পড়া হয়েছে

বাঘারপাড়া ঢাকায় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে বাঘারপাড়ার একমাত্র আহত ব্যক্তিকে পুনর্বাসন করেছেন যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শোভন সরকার। একটি স্কুলের গাড়ি চালকের কাজ দেওয়া হয়েছে তাকে। মিলন মোল্যা (৩৪) জীবিকার তাড়নায় ঢাকায় অটো রিকশা চালাতেন। গত ১৯ জুলাই ছাত্র-জনতার সাথে তিনিও আন্দোলনে মাঠে নামেন। এদিন তিনি পুলিশের গুলিতে আহত হন। দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে তিনি বাঘারপাড়ার গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন। মিলনের মা আর তাকে ঢাকায় যেতে দেননি। ছোট বেলায় পিতাহারা মিলনের জীবন ইতিহাসও অনেকটা কঠিন। গত ২৭ নভেম্বর বুধবার কথা হয় মিলন মোল্যার সাথে। তিনি জানান, তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি উপজেলার পোনাব গ্রামে। সাত বছর বয়সে বাবা আলম মোল্যার মৃত্যু হয়। এর কয়েকদিন পরে মিলন তার ছোট বোনকে নিয়ে মায়ের সাথে বাঘারপাড়ার জামদিয়ায় চলে আসেন নানা বাড়িতে। সেখানেই তার বড় হয়ে উঠা। ২০১২ সালে মিলন বিয়ে করেন।

সংসার জীবনে দুই বাচ্চার বাবা হন তিনি। সংসারের অভাব ঘোচাতে ভালো রোজগারের আশায় ২০২০ সালের আগস্টে ঢাকায় চলে যান। ঢাকার বাড্ডা এলাকায় শুরু করেন অটো রিকশা চালানো। থাকতেন খিলবাড়ি ট্যাকের পূর্বপাড়ায়। কিছু দিন পর স্ত্রী সন্তানদের সেখানে নিয়ে যান। মাস পার না হতেই তার স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে ঢাকা থেকে চলে আসেন। মিলনের স্ত্রী আর ঢাকায় ফিরে যাননি। এক সময় বিচ্ছেদ ঘটে। মনের কষ্টে আর মিলন বাড়িতে আসতেন না। মা ফুলি বেগমের সংসার খরচ পাঠিয়ে দিতেন। ১৯ জুলাই সকাল ১০টা পর্যন্ত রিকশা চালিয়ে মিলন যোগ দেন বাড্ডার ক্যামব্রিয়ান স্কুলের পাশে ছাত্রজনতার আন্দোলনে। হঠাৎ পুলিশের ছোড়া একটি বুলেট তার ডান পায়ের হাটুর নীচে লাগে। মুহূর্তেই সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এক সময় ছাত্রজনতা তাকে উদ্ধার করে উত্তর বাড্ডার এএমজেড হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই তার চিকিৎসা হয়। ১৭ দিন চিকিৎসা শেষে মিলন বাড়িতে ফিরে আসেন। সুস্থ হওয়ার পর মিলন ঢাকায় যেতে চাইলে বাধ সাধেন তার মা। যে কারণে আর ঢাকায় যাওয়া হয়নি। কর্মহীন হয়ে পড়ায় মিলন অর্থ সংকটে পড়ে। তার এ খবর জামদিয়া গ্রামের পল্লী চিকিৎসক উজ্জল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করেন। এরপর যশোর জেলা জামায়াতের আমির গোলাম রসুল তাকে নগদ দশ হাজার টাকার সহায়তা দেন। গত ২১ নভেম্বর যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম বাঘারপাড়ায় এসে মিলনকে ১৫ হাজার টাকার সহায়তা দেন।

এর আগে এ বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শোভন সরকার একটি কাজের প্রস্তাব দেন মিলনকে। মিলন রাজি হওয়ায় নির্বাহী অফিসার তাকে নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেন। বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শোভন সরকার জানিয়েছেন, বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে পরিষদ ক্যাম্পাসেই একটি শিশুদের স্কুল পরিচালিত হয়।। যার নাম বাঘারপাড়া শিশু কলি মডেল স্কুল। শতাধিক শিশু স্কুলে আসে। বিদ্যালয়ের নিজস্ব যানবাহন না থাকায় দূরের কোনো শিশুকে তার অভিভাবক স্কুলে পাঠাতে চান না। এই বিষয়টিকে মাথায় নিয়ে মিলন মোল্যাকে প্রস্তাব দেওয়া হয়, সে রাজি থাকলে স্কুলের জন্য একটি ইজিবাইক কেনা হবে। স্কুল টাইমে মিলন শিক্ষার্থীদেরকে আনা নেওয়া করবে। এর থেকে যা আয় হবে তার একটা অংশ দিয়ে দিয়ে সে ইজিবাইকের রক্ষণাবেক্ষন করবে, আর বাকিটা তার থাকবে। বাকি সময় মিলন রোডে ওই ইজিবাইকটিই চালিয়ে রোজগার করবে। দুই দিক থেকে মিলনের যা আয় হবে তা দিয়ে চলে যাবে। ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত মিলনকে কাজ দিয়ে বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শোভন সরকার তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, ডিসি স্যারের নির্দেশেই। মিলনের কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি করা হয়েছে।

এ ভাবে আমরা সবাই যদি গণঅভ্যুত্থানে আহতদের পাশে দাঁড়াই ও তাদের উপযোগী কর্মের ক্ষেত্র সৃষ্টি করি দেই তাহলে এ অভ্যুত্থানের সফলতা আসবে। একই সাথে দেশ এগিয়ে যাবে। মিলন মোল্যা গত কয়েকদিন ধরে তার নতুন কর্ম ক্ষেত্রে আসা-যাওয়া করছেন। তিনি বলেন, ‘নতুন এলাকা, নতুন গাড়ি, যে কারণে একটু সময় লাগবে নিজেকে মানিয়ে নিতে। তবে ইউএনও স্যার যা বলবেন আমি তাই করবো। আমি অন্য কোনো দিক আর যাবো না।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট