চুয়াডাঙ্গার নবগঙ্গা নদীর গতিধারা ও নাব্যতা ফেরাতে ২০১৯ সালে এর খনন কাজ শুরু হয়। পরে ২০২২ সালে কাজ সম্পন্ন না করেই নদীটির খনন কাজ শেষ হয়। কিন্তু নদীর বুকে ঠাঁই দাড়িয়ে রয়েছে সরকারি অবকাঠামো যুব উন্নয়ন ভবন। এই ভবনকে ঘিরেই আরও বেসরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন অবকাঠামো গড়ে উঠছে।
নদীর জমি অপদখল করে জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন নামে একটি বেসরকারি সংস্থা ভবন নির্মাণ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে এই ঘটনায় হতবাক স্থানীয়রা। তারা বলছেন, এভাবেই প্রভাবশালীদের দখলে বিলীন হওয়ার পথে একসময়ের খরস্রোতা নবগঙ্গা নদী। স্থানীয় একজন জানান, রাতারাতি এখানে ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এখানে কিভাবে কি হয়েছে কিছুই জানিনা।
এদিকে, নদীর জমি কিনেই ভবন তৈরি করা হচ্ছে বলে দাবি করেছে বেসরকারি সংস্থাটি। এ বিষয়ে স্থানীয় একজন বাসিন্দা বলেন, নদীর ভেতরে কারও জমি থাকতে পারে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত। অপরদিকে, জমির সিএস রেকর্ড ধরে জমি কিভাবে ক্রয় করলো, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এক বাসিন্দা।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাটি ক্রয়সূত্রে নদীর জমির মালিক দাবি করে কিছু কাগজপত্র দেখিয়েছেন। সেই সাথে খাজনার রশিদও দেখায় তারা। তবে সংস্থাটির খাজনার রশিদটি মূলত ইউনিয়ন পরিষদের ট্যাক্স পরিশোধের রশিদ।
তবে সংস্থাটির কর্মকর্তারা নদীর জমিতে ভবন নির্মাণের বিষয়ে ক্যামেরার সামনে বেশি কিছু বলতে চাননি। চুয়াডাঙ্গা জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনের ম্যানেজার জাহাঙ্গীর হোসেন জমিটি নিজেদের দাবি করে বলেন, জমিটি দুইবার মাপা হয়েছে। এরপরেই এখানে ভবন নির্মাণ শুরু হয়।
অপরদিকে নদীর জমি কেনাবেচার খবরে স্থানীয় প্রশাসনও অবাক। চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ আহমেদ বলেন, যদি অবৈধভাবে ভবন নির্মাণের কোনো অভিযোগ আসে, সেক্ষেত্রে কাগজপত্র যাচাই করা হবে। এরপর আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, নদীর জমি ভোগদখল বা বেআইনিভাবে অপদখলের সুযোগ নেই। তাছাড়া বেচাকেনারও কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সরজমিনে পরিদর্শন করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, নবগঙ্গা নদীর ১৪ কিলোমিটার খননে ৫ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছিল।