নতুন বছরের প্রথম দিনেও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং নিত্যপণ্যের বাজারের উত্তাপে বর্ষবরণের সব আয়োজন উদ্বেগ-উৎকণ্টায় কাটছে রাজধানীর খেটে খাওয়া মানুষের। কৃষক থেকে শ্রমিক, চাকরিজীবী থেকে অর্থনীতিবিদ, সবাই চাইছেন বছরটি হোক স্বস্তির, শান্তির।
শারীরিক প্রতিবন্ধী শাহজাহানের বয়স প্রায় ষাটের কাছাকাছি। স্ত্রীও শারীরিক প্রতিবন্ধী। তবে বয়স্ক ভাতা কিংবা প্রতিবন্ধী সুবিধা, উভয় থেকেই বঞ্চিত তারা। বয়স্ক ভাতার জন্য আবেদন করেও ব্যর্থ হন তিনি। তাই বাধ্য হয়ে রিকশার গ্যারেজে দিনমজুরের কাজ করেন। নতুন বছরে তার চাওয়া একটাই- সরকারিভাবে সহযোগিতা পাওয়া।
কথা হয় ধামরাইয়ের কৃষক মোহাম্মদ লিটুলের সঙ্গে। ২০২৪ সালটা কেটেছে কষ্টে কিন্তু নতুন বছর যেন বয়ে আনে সুখের বার্তা, সেই প্রত্যাশা তার। তিনি বলেন, নতুন বছরে সার, কীটনাশক ও বিদ্যুৎ বিলের দাম কমাতে হবে। না হলে উৎপাদন খরচের সঙ্গে লাভের হিসাব মেলাতে ফের হিমশিম খেতে হবে।
জীবনযাত্রার ব্যয় কমিয়ে আনাই সাধারণ মানুষের চাওয়া। যখন মূল্যস্ফীতি সাড়ে ১১ শতাংশ ছুঁই ছুঁই, তখন পণ্যের দাম কমাতেই স্বস্তি খুঁজছেন ক্রেতারা। বাগ্বিতণ্ডা এড়াতে দাম কমানোর পক্ষে বিক্রেতারাও। তারা বলেন, ২০২৪ সাল বাজার লাগামহীন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছে। নতুন বছরে যেন সেটি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
বুক ভরে দীর্ঘশ্বাস ফেলা, দিনে এনে দিনে খাওয়া, স্বল্প আয়ের মানুষের আশা, নতুন বছরে বাড়বে তাদের মজুরি, কমবে জীবনযাপন খরচ। তারা বলেন, বাজারে সব জিনিসের যে দাম, তাতে পরিবার-পরিজন নিয়ে চলা দায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে নিত্যপণ্যের ব্যয় কমানোর বিকল্প নেই।
মধ্যবিত্ত চাকরিজীবী শ্রেণির কাছে নতুন বছর মানেই, বাড়ি ভাড়া ও বাচ্চার পড়াশুনায় নতুন খরচ যোগ হওয়া। তারা বলেন, বেতন বৃদ্ধি, চাকরির নিরাপত্তা ও নিত্যপণ্যের দামে স্বস্তিই নতুন বছরে বড় প্রত্যাশা।
অর্থনীতিবিদদের আশা, মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় সহনীয় মাত্রায় রাখতে সরকার নতুন বছরে বাজার ব্যবস্থাপনার উপর নজর দেবে। এজন্য সঠিক পরিসংখ্যানের ওপর জোর দিয়েছেন।