যশোরের নবাগত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাসুদ আলম প্রথম কর্ম দিবসেই সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছেন। প্রথম দিন তিনি ছদ্মবেশে বাইসাইকেল চালিয়ে থানায়, ফাঁড়িতে, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, ট্রাফিক অফিসসহ তার জেলার বিভিন্ন দপ্তর পরিদর্শন করেন। যে ঘটনা আইনশৃংখলা বাহিনীতে বিরল। বিষয়টি চাউর হাওয়ার সাথে সাথে সোস্যাল মিডিয়ায় তার ছবিসহ প্রশংশায় ভাসছেন নবগত পুলিশ সুপার।
শাহ আলম নামে একজন ফেসবুকে পোস্ট দেন, যশোরের নবগত এসপি, আপনি নতুনত্ব নিয়ে আসছেন, আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো। আব্দুর রাজ্জাক নামে অপর একজন লেখেন, এমন মন মানসিকতা যদি অব্যাহত থাকে। তাহলে যশোরবাসী তথা বাংলাদেশের মানুষ উপকৃত হবেন। শুভকামনা ও দোয়া রইলো। আসাদুজ্জামান শাওন লেখেন, সত্যিকারের ভালো মানুষ এখনও আছে।
আমরাও সামনের দিনগুলোতে ভালো কিছু দেখতে চাই, এ আশায় রইলাম। জাহিদ হাসান নামে একজন লেখেন, চাকরির সুবাদে মাদারীপুর ছিলাম। তার সম্পর্কে অনেক কিছু আমার জানা। তিনি একজন সৎ পুলিশ অফিসার।
এ ব্যাপারে নবাগত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, আমার কাছে যে কোন নাগরিক আসতে পারবে। দরজা সব সময় খোলা থাকবে। সত্য, সুন্দর, ন্যায় ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠায় আমি সব সময় আছি ও থাকবো। তিনি বলেন, আমি তদবির করে যশোরে আসেনি। যশোর অনেক গুরুত্বপূর্ণ জেলা। সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় অপরাধ প্রবনতা থাকবে। চোরাচালান, চুরি, ছিনতাই-ডাকাতি, মাদক-অস্ত্রের কারবার, মারামারি, গন্ডোগোল রোধ করতে হবে। তিনি আরোও বলেন, আমি কাজ করতে চাই। আমাকে নিয়ে কোন টেনশন নেই। আমি আপনাদের সাথে থাকতে চাই। যে কোন প্রকার তথ্য আমাকে দেয়া হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তথ্য দাতার নাম পরিচয় গোপন রাখা হবে।
প্রসঙ্গত, নবগত জেলা পুলিশ সুপারের প্রথম কার্যদিবসে ভোরে তিনি সাদা পোষাকে বাইসাইকেল যোগে পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তর পরিদর্শন করেন। প্রথমে নবাগত পুলিশ সুপার গিয়েছিলেন জেলা প্রশাসকের বাংলাতে। সেখানে কর্মরত কনস্টেবল গার্ড তাকে চিনতে না পারাই গেটের দাঁড় করিয়ে দেন। এবং তার পরিচয় ও দেখা করার কারণ জানতে চান। বিশেষ প্রয়োজন দাঁড় করালেও তাকে ডিসির অনুমতি ছাড়া ঢুকতে দেননি ওই কনস্টেবল। পরে তিনি সেখান থেকে চলে আসেন জেল রোড ট্রাফিক অফিসে। সেখানে কোন গার্ড না পেয়ে চলে যান, চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়িতে।
সেখানকার প্রধান বন্ধ গেটে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু সেখানেও কাউকে পাওয়া যায় না। এরপর তিনি গিয়েছিলেন কোতোয়ালি থানায়। সেখানে তিনি পরিচয় গোপন রেখে থানার ডিউটি অফিস রুমে গিয়ে মোবাইল হারিয়ে গেছে জানিয়ে জিডি করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। কিন্তু ডিউটি অফিসার তাকে জানান এত সকালে থানায় জিডি নেওয়া হয় না। তাকে অনুরোধ করলে দায়িত্ত্¦রত ডিউটি অফিসার টাইপ করে আনতে বলেন। সেখান থেকে বের হয়ে তিনি যান পুলিশ লাইনস্।ে গেটে দায়িত্তরত কনস্টেবল তার পরিচয় জানতে চান। তিনি জানান, এখানে তার কামাল নামে এক বন্ধু আছে। তার সাথে তিনি সাক্ষাৎ করতে চান। তাকে ভিতরে যাওয়ার পারমিশন দেয় দেন ওই কনস্টেবল। ভিতরে প্রবেশ করে সরাসরি তিনি ব্যারাকের তৃতীয়তলার খাবার ঘরে প্রবেশ করে খিচুড়ি খেয়েছিলেন। এবং অনেকের সাথে আলাপও করেছিলেন। এমন ঘটনা সোস্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ পাওয়ার পর তা মূহুর্তে ভাইরাল হয়ে যায়।