বাঘারপাড়ার পল্লীতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে দুধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার দিবাগত ভোর রাতে ধলগ্রাম ইউনিয়নের বারভাগ গ্রামের পশুপতি দেবনাথ ও বিশ^নাথ দেবনাথের বাড়িতে ডাকাতির এ ঘটনা ঘটে। ডাকাত দল এ সময় লক্ষাধিক টাকা ও সাত ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নেয়। বাঘারপাড়া থানা ও যশোর জেলা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ভুক্তভোগি পশুপতি দেবনাথের ছেলে ব্রজেস্বর দেবনাথ জানিয়েছেন, শুক্রবার দিবাগত ভোর রাতে আনুমানিক চারটা পনের মিনিটের দিকে ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে তাদের ডাকাডাকি করে। ঘর খুলতে না চাইলে ডাকাত দল ঘর ভেঙ্গে ডুকবে এমন হুমকিতে তারা ঘরের দরজা খুলে দেন। ঘরে ডুকে ডাকাতদল তাদের বলে, তাদের কাছে তথ্য রয়েছে চট্রগ্রামে ইসকন হিন্দুদের নামে যে মামালা হয়েছে সেই মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত এক আসামী এ বাড়িতে লুকিয়ে আছে। এর পর ডাকাত দল প্রায় ১৫ মিনিট পুরো পুলিশের অভিনয় করে। সকলের গায়ে পুলিশের পোশাক ছিলো। কয়েকজনের গায়ে ডিবি পোশাকের মত জ্যাকেট ছিলো। তবে তাতে ডিবি লেখা ছিলো না। এ সময় তারা ওয়াকিটকিতে কথা বলতে থাকে। হঠাৎ একটা চাইনিজ কুড়াড় বের করে বলে, এইটা পাওয়াগেছে আর কি কি অস্ত্র আছে বের কর। এরপর তারা অস্ত্র খোঁজার ভান করে বিভিন্ন ফার্নিচারে রাখা জিনিসপত্র তচনচ করতে থাকে। ডাকাত দল এক পর্যায়ে ব্রজেস্বর ও তার কাকা বিশ^নাথের হাত পিঠ মোড়া দিয়ে বেঁধে ফেলে। তারপর চড় থাপ্পড় মারতে থাকে। এক পর্যায়ে মেরে ফেলার ভয় দেখাতে শুরু করে। এ সময় মহিলাদের ভয় দেখাতে থাকে আলমারি চাবি না দিলে তাদের মেরে ফেলবে। বাধ্য হয়েই তাদের হাতে চাবি দিয়ে দেওয়া হয়। এরপর তারা পশুপতি দেবনাথের ঘর থেকে এক লক্ষ টাকা ও কয়েক ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে নেয়। পরে ডাকাতদল বিশ^নাথ দেবনাথের ঘর থেকে পাঁচ হাজার টাকা ও কয়েকভরি স্বাণালংকার নিয়ে নেয়। দুই পরিবারের মোট স্বর্ণের মরিমান প্রায় সাত ভরি ও মোট টাকার পরিমাণ এক লক্ষ পাঁচ হাজার। ১০/১২ জনের ডাকাত দল সম্পূর্ণ ঘটনাটি ৩৫ থোকে ৪০ মিনিটের মধ্যে সম্পন্ন হয়।
ব্রজেস্বর আরো জানায়, তাদের আর তার কাকার পরিবারে মোট সদস্য সংখ্যা নয়জন। ঘটনার দিন পাঁচজন সদস্য আত্বীয় বাড়ি ছিলো। বরভাগ নিতাই গৌর নামহট্ট মন্দির তাদের বাড়ির ভেতরেই। মন্দির অভ্যান্তরে দুটি বড় ট্রাঙ্ক ছিলো। যে ট্রাঙ্কে বেশিরভাগ স্বর্ণালংকার রাখা ছিলো। ডাকাতদল ঘরের সমস্ত ফার্নিচারে কাপড়-চোপড় বের করে তছনচ করে ফেলে।
মামুদালিপুর গ্রামের সাখাওয়াত হোসেন জানিয়েছেন, রাত চারটার দিকে তিনি গরুর খাবার দিতে গোয়ালে প্রবেশ করেন। এ সময় তিনি দেখতে পান পাঁচ ছয়টি মোটর সাইকেল যোগে পুলিশের পেশাক পরা একটি দল বরভাগের দিকে যাচ্ছে। আনুমানিক ৪০/৫০ মিনিট পর একই দলটি আবার নোয়পাড়ার দিকে ফিরে য়ায়।
বাঘারপাড়া থানার ওসি আব্দুল আলীম জানিয়েছেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। যেহেতু মোটর সাইকেল যোগে এসেছে সে কারণে দুরের কোন পার্টি কিনা তা বোঝা যাচ্ছে না। তবে এলাকার কেউ না কেই এর সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পারে। এখনও পর্যন্ত এজাহার হাতে পায়নি। এজাহার পেলে বাকিটা বলতে পারবো।