শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দূর্নীতি বন্ধের কঠোর হুশিয়ারি দিয়ে এমপি এনামুল হক বাবুল অনেকের বাড়া ভাতে ছাই ঢেলে দিয়েছেন। এতে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আশাহত হয়ে বেকায়দায় পড়েছেন। অনেকের কপালে চিস্তার ভাঁজ পড়েছে নিয়োগ দেওয়ার নামে যে অর্থ নিয়েছেন তা কিভাবে হজম করবেন। গতকাল বাঘারপাড়ায় এক মত বিনিময় সভায় এসব বিষয় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
মত বিনিময় সভার প্রধান অতিথি যশোর ৪ আসনের এমপি এনামুল হক বাবুল বলেছেন, উন্নত জাতি গঠনে শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। অথচ সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টাকার বিনিময়ে অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, এখনও চলছে। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আয়া বা পিওনের পদে চাকরি নিতে ১৫ লক্ষ টাকা দিতে হচ্ছে। এমনও নজির আছে একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান পদে নিয়োগ ২৮/৩০ লক্ষ টাকা নেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠান প্রধান, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, একজন জনপ্রতিনিধি আর নিয়োগ বোর্ডে অন্যান্যে সদ্যরা এই দুর্নীতিতে একাকার হয়ে গেছে। গতকাল বাঘারপাড়া উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিদের সাথে এক মত মিনিময় সভায় এমপি এনামুল হক বাবুল এ কথা বলেন। এ সময় তিনি কঠোর হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন ভাবেই নিয়োগ বানিজ্য চলতে পারে না। এই বানিজ্য যে কোন ভাবেই বন্ধ করতে হবে। তা না হলে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অযোগ্য শিক্ষকে ভরে যাবে। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একজন অযোগ্যা শিক্ষক থাকলে তার কুফল কয়েক যুগ ভোগ করতে হবে ঐ অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের। ভয়াবহ এই কাজটি বন্ধের জন্য তিনি সকলকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অডিটের নামে যে ঘুষ বানিজ্য চলে, সে ক্ষেত্রে অডিট টিমকে কোন টাকা না দেওয়ার জন্য এমপি এনামুল হক বাবুল শিক্ষকদের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান। তিনি শিক্ষকদের আশ্বস্ত করে বলেন, এ কারণে কোন অডিট আপত্তি হলে তিনি তা সর্বোচ্চ পর্যায়ে ফেজ করবেন।
বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ মত বিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসনে আরা তান্নি। সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মর্জিনা আক্তার ও উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুল কবির বিপুল ফারাজী। নারিকেলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমদাদ হোসেনের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বিশেষ অতির বক্তব্য রাখেন বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা হাসান আলী, ভাইস চেয়ারম্যান দিলারা জামান ও এনায়েত হোসেন লিটন, নবাগত ওসি রাকিবুজ্জামান, ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আশিকুজ্জামান, প্রভাষক নজরুল ইসলাম প্রমুখ। বক্তাদের অধিকাংশই বিগত ১৫ বছর যাবত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ বানিজ্য নিয়ে কথা বলেন। তবে নবাগত উপজেলা চেয়ারম্যান বিপুল ফারাজি উপস্থিত সকলের কাছে এ বিষয়ে একটি শ্বেত পত্র তৈরীর আহবান জানান। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ইউপি’র চেয়ারম্যান, বিভন্ন শিক্ষা প্রতষ্ঠানের প্রধান ও সভাপতি বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।