যশোর শহরের ভৈরব নদের পাড়ের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ আজ রবিবার সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। সাক্ষাৎকারকালে ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, জোয়ার ভাটাবিহীন ভৈরব নদের পাড় ধসে ১৫-২০টি বাড়ি ভেঙে নদে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া নদের ধারে বসবাসকারী শতাধিক ব্যক্তির বাড়ির জায়গা, গাছপালা ভেঙে বিশাল খাদের সৃষ্টি হয়েছে।
নদের পাড়ে বসবাসকারী দরিদ্র ও অসহায় এসব মানুষ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জীর কাছে তাদের অসহায়ত্ব তুলে ধরেন। তারা জানান, নদের পাড়ে বাঁধ দেয়া না হলে এখনও যতটুকু আছে, সেসবও বিলীন হয়ে যাবে। তাদের আশ্রয়টুকু রক্ষার দাবি জানান তারা। সাক্ষাৎকালে উপস্থিত ছিলেন শহরের পুরাতন কসবা ঘোষপাড়া ভৈরব পাড় এলাকার বাসিন্দা সায়েমা রহমান, শওকত আলী, সজীব ইসলাম, শামীমা জামান, শফিকুল ইসলাম, গৌতম রায়, রাফিয়া আক্তার মৌসুমী, খায়রুল ইসলাম প্রমুখ।
তারা বলেন, ইতোমধ্যে ঘোষপাড়া এলাকার আনোয়ার হোসেন, বারিক আলী, সজীব ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, আমেনা বেগম, গোলাম মোস্তফা, সিদ্দিক হোসেন, কোহিনুর বেগম, মোহাম্মদ শাহিন, আলমগীরসহ কমপক্ষে ২০ জনের ঘরবাড়ি নদের মধ্যে ভেঙে তলিয়ে গেছে। শতাধিক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন, আমরা খুব শিগগিরই এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করছি। আমরা চাই, সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে দ্রুততম সময়ে নদের পাড়ে বাঁধ দেয়া হোক। একটা স্থায়ী সমাধানের জন্যে আমরা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীকে গত সপ্তাহে দরখাস্ত দিয়েছি। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। তারা বলেন, যাদের বাড়িঘর বিলীন হয়ে গেছে, সেই সমস্ত অসহায় দরিদ্র পরিবারের লোকজনের মাথা গোজার ঠাঁই যেন হয়, সেই লক্ষ্যে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী বলেন, আমরা খুব শিগগিরই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। জিও ব্যাগের মাধ্যমে আপাতত পাড় ভাঙন রোধে ব্যবস্থা করা হবে। আগামী বর্ষা মৌসুম আসার আগেই আমরা আরও কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া যায়, সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা করবো। কবে নাগাদ কাজ শুরু হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে সেটা বলতে পারছি না। তবে, কাজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে হবে- এটুকু বলতে পারি।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে ভৈরব খননের সময় স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী লোক এখানে মেশিন লাগিয়ে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করে। তাদের সেই নিষেধ করা হলেও তারা জানিয়ে দেয়, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা এই কাজ করছে। তারা সেই সময় হাজার হাজার ট্রাক বালি উত্তোলন করায় ভৈরবের এই এলাকায় ব্যাপক ভ্যাকুয়ামের সৃষ্টি হয়। ফলে গত বছরের বৃষ্টিতে অল্প কয়েক জায়গায় ভাঙন হলেও এবছর লাগাতার বৃষ্টিতে সেটি তীব্রতা পায়।