‘কলঙ্ক’ দিয়ে যাত্রা হলো বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নতুন কমিটির! মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিকালে এফডিসিতে সংগঠনটির নবনির্বাচিত কমিটির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু এরপরই ঘটেছে এক অপ্রত্যাশিত, ন্যক্কারজনক ঘটনা।
অভিযোগ, সংবাদকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন কয়েকজন চলচ্চিত্র শিল্পী।
জানা গেছে, শপথগ্রহণ শেষে সমিতির অফিসে খবরের কাগজ পত্রিকার সাংবাদিক মিথুন আল মামুন সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন ময়ূরীর মেয়ের। এসময় অভিনেতা শিবা শানু এই সাংবাদিককে বেরিয়ে যেতে বলেন। না যেতে চাইলে তাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে অফিস থেকে বের করে দেন শানু। এর মধ্যে সেটি থামাতে এগিয়ে আসেন উপস্থিত অন্য সাংবাদিকরা। এসময় সমিতির আরেক নেতা জয় চৌধুরী ‘মার মার’ বলে তেড়ে যান সাংবাদিকদের দিকে। শুরু হয় সাংবাদিক ও শিল্পীদের মধ্যে তুমুল মারামারি। এরপরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পুরো এফডিসি পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। মারামারিতে রীতিমতো রক্তাক্ত হন কয়েকজন সংবাদকর্মী।
বিষয়টি নিয়ে এখন পর্যন্ত শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ সাংবাদিক মিথুন আল মামুন জানান, এতে তিনিসহ প্রায় ১০/১২ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। তার নিজের মুঠোফোন হারিয়েছেন এবং অনেক ক্যামেরাও ভেঙেছে। তারা এখন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এর আগে বিকাল ৫টার দিকে অনুষ্ঠিত হয় সমিতির শপথগ্রহণ। শুরুতে নবনির্বাচিত সভাপতি মিশা সওদাগরকে শপথবাক্য পাঠ করান চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ। এরপর অন্যদের শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন মিশা। এ সময় নির্বাচিত সদস্যরা ছাড়াও সিনেমা অঙ্গনের আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
শপথ শেষে মিশা সওদাগর বলেন, ‘যেসব শিল্পী আমাদের এই বিশাল জয়ে সহযোগিতা করেছেন, তাদের আন্তরিক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাই। পুরো চলচ্চিত্র পরিবারের কাছে আমরা ঋণী। আর সবার জ্ঞাতার্থে বলছি, এখন থেকে সমিতির আগের কমিটি এবং নির্বাচন পরিষদ সবার কার্যকারিতা শেষ। এই বিকাল ৫টা থেকে আগামী দুই বছর আমরা শিল্পী সমিতির কার্যক্রম বৈধভাবে পরিচালনা করবো। এজন্য সবার সহযোগিতা কামনা করছি।’
এবারের নির্বাচনে সহ-সভাপতি পদে জয়লাভ করেছেন মাসুম পারভেজ রুবেল ও ডি এ তায়েব, সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে আরমান, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে জয় চৌধুরী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে আলেকজান্ডার বো, দফতর ও প্রচার সম্পাদক পদে জ্যাকি আলমগীর এবং কোষাধ্যক্ষ পদে নির্বাচিত হয়েছেন কমল। এছাড়া সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক হিসেবে মামনুন ইমন বিজয়ী হয়েছেন।
কার্যনির্বাহী সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন সুচরিতা, রোজিনা, আলীরাজ, সুব্রত, দিলারা ইয়াসমিন, শাহনূর, নানা শাহ, রত্না কবির, চুন্নু, রিয়ানা পারভিন পলি ও সনি রহমান।
উল্লেখ্য, এবারের নির্বাচনে মিশা-ডিপজলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন একসময়ের আলোচিত চিত্রনায়ক মাহমুদ কলি ও শূন্য দশকের নায়িকা নিপুণ আক্তার। নির্বাচনে প্রধান কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু।