1. live@www.chitrarpar.com : news online : news online
  2. info@www.chitrarpar.com : চিত্রারপাড় :
বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৭ অপরাহ্ন

যবিপ্রবি সহকারী পরিচালক রশিদের বিচার দাবি

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১৫ বার পড়া হয়েছে

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থী নির্যাতন, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) প্রাক্তন ভিসির একান্ত সচিব সহকারী পরিচালক আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন শিক্ষার্থীরা।

আজ মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে যবিপ্রবি’র রেজিস্ট্রার বরাবর এই স্মারকলিপি প্রদান করে শিক্ষার্থীরা অভিযোগগুলোর সঠিক তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে একাধিক নিয়োগ বাণিজ্যসহ বেশ কয়েকটি মামলাও রয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বেশ কয়েকটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ইমদাদুল হক স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেছেন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, গত জুলাই-আগস্টে যবিপ্রবি’র তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চরম বিরোধিতা করেন। ওই সময় তিনি ছাত্রলীগ, পুলিশ, তার অনুগত শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের দিয়ে আন্দোলনকারীদের উপর ব্যাপক অত্যচার নির্যাতন চালান। উপাচার্যের পক্ষে আন্দোলন দমনে নির্যাতন চালানোর ঘটনায় নেতৃত্ব দেন আব্দুর রশিদ।

৭৯ জন শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব আশরাফুল ইসলাম খোকনের সুপারিশে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে জনসংযোগ কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পান আব্দুর রশিদ অর্ণব। এই ক্ষমতাবলে আব্দুর রশিদ সাবেক উপাচার্য ড. আনোয়ার হোসেনের ডান হাত খ্যাত হয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তিকে পরিণত হন। এছাড়াও ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনের বন্ধু পরিচয় দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষমতার দাপট দেখাতে শুরু করেন। যবিপ্রবির শহীদ মসিয়ূর রহমান হলে ছাত্র নির্যাতনের ঘটনা তার নেতৃত্বে হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৮ সালে যবিপ্রবি উপাচার্যের পিএ পদে ১৭ লাখ টাকার বিনিময়ে আব্দুর রশিদ তার বন্ধু মনজুরুর রহমানের চাকরি চূড়ান্ত করেন। ওই বছর ১ সেপ্টেম্বর রিজেন্ট বোর্ডের ৫০তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই নিয়োগ গৃহীত হয়। পরবর্তীতে এই ঘটনা ধরা পড়লে ৫১ তম রিজেন্ট বোর্ডে উক্ত পিএ পদের মনজুরুর রহমানের চাকরি স্থগিত হয়। ওই ঘটনায় রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য প্রফেসর ডাক্তার আব্দুর রশিদ অপরাধী আখ্যা দিয়ে ভিসির একান্ত সচিব আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয় ব্যক্ত করেন। আর টাকা কিংবা চাকরি ফেরত না পেয়ে ২০২০ সালের ২৩ জুন প্রেসক্লাব যশোরে আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে ১৭ লাখ টাকার দুর্নীতির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেন। এ ঘটনায় রিজেন্ট বোর্ড থেকে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে। তবে ঘটনা তদন্ত শেষে উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেনের যোগসাজসে তদন্ত প্রতিবেদন আব্দুর রশিদের পক্ষে প্রদান করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ন্যায়বিচার না পেয়ে মনজুরুর রহমান ২০২১ সালের ৭ জানুয়ারি হাইকোর্টে চাকরি ফেরত চেয়ে রিট পিটিশন দাখিল করেন। পিটিশন গ্রহণ করে আদালত নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত একটি পদ শূন্য রাখার নির্দেশ দেন। মামলাটি হাইকোর্টে এখনও বিচারাধীন ।

২০২৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ড্রাইভার মফিজুর রহমান উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে যান। কিন্তু সেখানে দায়িত্বরত উপাচার্যের একান্ত সচিব রশিদ অর্ণব তাকে অফিস থেকে বের করে দেন এবং লাঞ্ছিত করেন। এই ঘটনায় অপমানিত ড্রাইভার মফিজুর রহমান মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে ওই রাতেই গায়ে পেট্রোল ঢেলে আত্মহত্যা করেন। এই ঘটনায় আব্দুর রশিদ অর্ণবসহ অপরাধীদের বিচারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও এলাকাবাসী লাশ নিয়ে মিছিল করেন এবং দায়ীদের দ্রুত শাস্তির দাবি জানান।

এ ঘটনায় গত ৯ জানুয়ারি বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোতোয়ালি আমলী আদালত সিনিয়র ড্রাইভার মফিজুর রহমানের স্ত্রী জিনিয়া মেহের আব্দুর রশিদ অর্ণবসহ আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। এই মামলাটিও বিচারাধীন। এছাড়াও আব্দুর রশিদ অর্ণবের বিরুদ্ধে যবিপ্রবিতে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য, নথি চুরি, ক্যালেন্ডার কেলেঙ্কারিসহ এন্তার অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বেশ কিছুদিন আব্দুর রশিদ কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। গত ১৩ আগস্ট থেকে প্রাক্তন উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেনসহ উপাচার্যের দোসর ও দালালদের পদত্যাগের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেন। ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনের মুখে আব্দুর রশিদ ২০ আগস্ট উপাচার্যের একান্ত সচিব পদ থেকে পদত্যাগ করেন। পরবর্তীতে প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন ছাত্র আন্দোলনের মুখে গত ২১ আগস্ট পদত্যাগ করেন। গত ৯ সেপ্টেম্বর আব্দুর রশিদকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞ্ছিত করে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।

যবিপ্রবির ছাত্র আন্দোলনের নেতা আকিব ইবনে সাইফ জানিয়েছেন, বিগত সরকারের পক্ষে চাটুকারি করতেন আব্দুর রশিদ। তিনি নিয়োগ দুর্নীতি, দমন পীড়ন, সিনিয়রদের মানহানিসহ সব ধরণের অপকর্মে জড়িত ছিলেন। বিশেষ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে ছাত্রলীগকে ও পুলিশকে উস্কানি দিতেন তিনি।

ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ইমদাদুল হক জানিয়েছেন, তিনি স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেছেন। তিনি এটিকে উপাচার্য মহোদয়ের কাছে প্রেরণ করবেন।

এদিকে, স্মারকলিপি প্রদান ও অভিযোগের ব্যাপারে সহকারী পরিচালক আব্দুর রশিদের কাছে ফোন করলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি কোনোকিছুর সাথেই জড়িত নই। আগে আমাকে জামাত শিবির বানিয়েছে,এখন ছাত্রলীগ বানাচ্ছে।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট