যশোরে নিখোঁজের একদিন পর জোনাকি খাতুন (৯) নামের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দুপুরে যশোর শহরের রেলগেটস্থ মডেল মসজিদের পিছনের একটি পুকুর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এদিনই পুলিশ লাশটি যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।
মৃতের দাদীর দাবি, জোনাকিকে তার সৎ মা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। সে কারণে পুলিশ সৎ মা নার্গিস বেগমকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
জোনাকি খাতুন বেনাপোলের পোড়াবাড়ি এলাকার শাহিন তরফদারে মেয়ে। শাহিনের প্রথম স্ত্রীর ছোট সন্তান জোনাকি। বর্তমানে শাহিন তরফদার দ্বিতীয় স্ত্রী নার্গিস বেগমকে নিয়ে যশোর শহরের মডেল মসজিদের পিছনে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করেন।
স্বজনরা জানিয়েছেন, জোনাকি খাতুন বেনাপোলে দাদার বাড়িতে থাকে। ৬ দিন আগে বেনাপোলের দাদা বাড়ি থেকে যশোর শহরের রেলগেট এলাকার পিতার বাড়িতে বেড়াতে আসে। সোমবার সকাল ১০টা থেকে সে নিখোঁজ ছিল। কোথাও তার সন্ধান না পেয়ে ওইদিনই তার পিতা শাহিন তরফদার কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
ওই জিডির তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, জোনাকি নিখোঁজের ব্যাপারে বিভিন্ন থানায় বার্তা প্রেরণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে জোনাকির লাশ উদ্ধার করা হয়। জোনাকির শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
তাদের স্বজনদের দাবি জোনাকির পিতা শাহিনের সকল সম্পত্তি আত্মসাৎ করতে তার সৎ মা নার্গিস বেগম জোনাকি খাতুনকে নির্যাতন করে হত্যা করেছেন।
মৃতের মেজো বোন চুমকি খাতুন বলেন, আমার ছোট বোন বেনাপোলে দাদীর কাছে থেকে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়াশুনা করে। আমার আব্বুর (শাহিন তরফদারে) অনেক সম্পত্তি আছে। আমার সৎ মা সেগুলো তার করে নিতে চায়। সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে পরিকল্পিতভাবে সৎ মা নার্গিস বেগম তার ছোট বোন জোনাকি খাতুনকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে।
জোনাকির দাদী সুরবান বেগম বলেন, মঙ্গলবার এক শিশু এসে বলছে বাড়ির পিছনের পুকুরে জোনাকির লাশ ভাসছে। পানি থেকে ওঠানোর পরে দেখি তার হাঁটু, পা, হাত, গলা শরীরে বিভিন্ন স্থানে ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে। তবে জোনাকিকে হত্যা করা হয়েছে বলে তার দাদী দাবি করেছেন। তিনি এই হত্যার বিচার চান।
এদিকে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মৃত শিশুটির সৎ মা নার্গিস বেগমকে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে।
এদিকে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কোন মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন ওসি আব্দুর রাজ্জাক।