যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতি ও মানববন্ধনে হামলার ঘটনা ঘটেছে। সারা দেশের ন্যায় দুই দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) অনির্দিষ্টকালের জন্য সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তারা এ কর্মসূচি পালন করেন এবং আগামী শনিবার থেকে আবারও কর্মসূচিতে ফিরবেন বলে জানান।
এদিকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার ইছাহাক আলীর নির্দেশে গোপালের নেতৃত্বে বাইরে থেকে গুন্ডাবাহিনী এবং ঠিকাদার সালাম ও তার ছোট ভাই হামলা চালায়। এ সময় অফিস গেটে তালা মেরে দেওয়ারও অভিযোগ করেন আন্দোলনকারীরা।
দাবি দুটি হলো, স্মার্ট ও টেকসই বিদ্যুৎব্যবস্থা বিনির্মাণে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে একীভূতকরণসহ অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন করতে হবে এবং ভবিষ্যৎ বিদ্যুৎব্যবস্থা সচল রাখতে এবং গ্রাহকসেবার মান উন্নয়নের জন্য সব চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মচারীদের চাকরি নিয়মিত করতে হবে।
কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন, ডিজিএম (টেকনিক্যাল) আব্দুল হাকিম, এজিএম (জিএস) নাবিব আহমেদ সাঈদ, এজিএম (এইচআর) আব্দুর রউফ, এজিএম (কম) শান্ত মজুমদার, এজিএম (এমএস) এনামুল হক, এজিএম (রাজস্ব) আব্দুল আওয়াল, এজিএম (বেনাপোল ইনচার্জ) আসাদুজ্জামান, এজিএম (রুপদিয়া ইনচার্জ) শরিফুল ইসলাম, এজিএম (বাগআঁচড়া) সোহরব হোসেন, এজিএম (পুড়াপাড়া) কামরুজ্জামান জনি, শার্শা জোনাল কেন্দ্রের ইনফোর্স কোর্ডিনেটর এবাদত হোসেন, এলইটি মেহেদী হাসান সুমন, এলএমআই শাহজাহান আলী, জুনিয়র প্রকৌশলী সাইজুল, বেনাপোল কেন্দ্রের গ্রিড ইনচার্জ হাফিজুর রহমান, জুনিয়র প্রকৌশলী সাইদুর রহমান, ফাইজুর রহসান, রাফিউল ইসলাম, এইসি মাহিম চৌধুরী, সদর কেন্দ্রের জাকির হোসেন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎসেবা দিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝড়বৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মাথায় নিয়ে দিন-রাত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু সমিতির তদারকি প্রতিষ্ঠান পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বিআরইবি) দ্বৈত নীতির কারণে ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা হতে বঞ্চিত হচ্ছেন দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৪০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী।
তারা জানান, একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলেও পদপদবি, বেতনভাতা, বোনাসসহ পদোন্নতির ক্ষেত্রে চরম বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন। শুধু তাই নয়, বিআরইবির অদক্ষতা ও নিম্নমানের সামগ্রীর কারণে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। বিতরণ লাইনে ব্যবহৃত নিম্ন মানের মালামালের জন্য উত্তম গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না।
বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের এ আন্দোলন চলবে। এ সময় বিশেষ ব্যবস্থায় জরুরি বিদ্যুৎসেবা চালু রেখেই কর্মবিরতির পালন করবেন বলেও জানান।
উল্লেখ্য, সারা দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৪০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী সর্বাত্মক এ কর্মবিরতি পালন করছেন।