বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রেষণ-২ শাখা থেকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ অর্থাৎ গতকাল মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। আগামী দুই মাস (৬০ দিন) এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।
সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেয়ার ব্যাপারে সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন প্রবাসীকল্যাণ ও আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, ‘বর্তমানে কিছু কিছু অঞ্চলে বিশেষ করে শিল্পাঞ্চলগুলোতে নাশকতা, অরাজকতার মতো কর্মকাণ্ড ঘটছে। উদ্ভুত পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া হয়েছে। এ সমস্ত অপতৎপরতা রুখে দেওয়ার জন্য, মোকাবিলা করার জন্য তাদের হাতে এ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।‘
এই ক্ষমতা সীমিত সময়ের জন্য জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি সেনাবাহিনী দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে এর কোনো অপপ্রয়োগ ঘটবে না। আশা করছি পরিস্থিতির উন্নয়ন হলে সেনাবাহিনীর এই দায়িত্ব পালনের প্রয়োজনীয়তা থাকবে না।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে ব্যাপক গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। সরকার পতনের পর দেশের আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সারা দেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এখনো সারা দেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন আছে। এর মধ্যেই গতকাল সেনাবাহিনীকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেয়া হলো।
গতকাল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করা হলো।
ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫ (২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অধীন অপরাধগুলো আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন সেনাবাহিনীর বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা পাওয়া কর্মকর্তারা।
এর ফলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পাওয়া সেনা কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে তারা অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে বা গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিতে পারবেন, অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় অন্যান্য ব্যবস্থাও নিতে পারবেন।