দেশের বাজারে নিত্যপণ্যের অস্থিরতা থাকলেও সরকারি হিসাব বলছে, সেপ্টেম্বর মাসে দেশের গড় মূল্যস্ফীতি কমেছে। সেপ্টেম্বরে দেশের গড় মূল্যস্ফীতি কমে ৯.৯২ শতাংশে এসেছে। তবে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের ঘরেই আছে। এ মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ১০.৪ শতাংশে ঠেকেছে। বুধবার (২ অক্টোবর) সেপ্টেম্বর মাসের ভোক্তা মূল্যসূচকের (সিপিআই) এ তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
গড় মূল্যস্ফীতি ৯.৯২ শতাংশের অর্থ হলো ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে যে পণ্য গড়ে ১০০ টাকায় কিনতে হয়েছিল, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে এসে তা কিনতে হয়েছে ১০৯ টাকা ৯২ পয়সায়।
জানা যায়, জুলাই ও আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলের শেষ মাস জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি ১১.৬৬ শতাংশে উঠেছিল, খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ বছরে সর্বোচ্চ অবস্থানে গিয়ে ১৪.১ শতাংশে ঠেকেছিল।
পরের মাস আগস্টে গড় মূল্যস্ফীতি কমে ১০.৪৯ শতাংশে নামে, খাদ্য মূল্যস্ফীতিও নামে ১১.৩৬ শতাংশে। সেপ্টেম্বর মাসে দেশের খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে ৯.৫ শতাংশে ঠেকেছে। আগস্টেও তা ছিল ৯.৭৪ শতাংশ। তবে শহরের তুলনায় গ্রামের মানুষের নিত্যপণ্যের কেনাকাটায় বেগ পেতে হচ্ছে বেশি। সেপ্টেম্বরে গ্রামাঞ্চলে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ১০.১৫ শতাংশ, যেখানে শহরাঞ্চলে ৯.৮৩ শতাংশ।
আওয়ামী লীগ সরকারের নানা অনিয়ম, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্রমাগত লুটপাটের কারণে ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট দেখা দেয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার টাকা ছাপিয়ে ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দেন। ফলে দেশের মূল্যস্ফীতি গত ১৬ মাসের বেশি সময় সাড়ে ৯ শতাংশের বেশি রয়েছে।
জানা যায়, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশ্বব্যাপী নিয়ম হলো ব্যাংকঋণের সুদের হার বাড়ানো। নতুন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর দায়িত্ব নেওয়ার পর দুই দফা সুদের হার বাড়ানোর উদ্যোগ নেন। সব মিলিয়ে ব্যাংকঋণের সুদের হার এখন ১৪ শতাংশের বেশি।
সর্বশেষ উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর নন্দলাল বীরাসিংহে। ৭০ শতাংশ মূল্যস্ফীতির সময় দায়িত্ব নিয়ে সেপ্টেম্বরে দেশটির মূল্যস্ফীতি ছিল ঋণাত্মক ০.৫ শতাংশ।